Saturday, May 2, 2009
# যুক্তরাষ্ট্র : যে দেশে 'মে দিবস' উপেক্ষিত !
যুক্তরাষ্ট্র : যে দেশে 'মে দিবস' উপেক্ষিত !
রণদীপম বসু
১৮৮৬ সালে শিকাগোর হে মার্কেটে দৈনিক শ্রমঘণ্টা কমিয়ে দিনে আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে বিক্ষুব্ধ মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত শ্রমিকদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে বিশ্বব্যাপি পহেলা মে’র দিনটিকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে বেছে নেয়া হয়।
জাতিসংঘও এ দিনটিকে অনুমোদন করে। শ্রদ্ধাজ্ঞাপনকারী প্রায় সব রাষ্ট্রগুলোতে দিনটিকে সরকারিভাবে ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ যে দেশে এই মে দিবসের সৃষ্টি, যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে শ্রমিকরা একতরফা দিনটিকে পালন করলেও সরকারিভাবে নাকি মে দিবস পালিত হয় না ! ওখানে যে দিনটিকে লেবার ডে হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয় তা হচ্ছে পহেলা সেপ্টেম্বর। মজার ব্যাপার, সেপ্টেম্বরের প্রথম দিনটি হচ্ছে গ্রীষ্মকালকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর দিন। এ দিনটিকে আবার শ্রমিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সবাই একত্রে পালন করে থাকে।
১৮৮৬ সালে হে মার্কেটের এই ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ধনিক শ্রেণীর পক্ষ হতে শ্রমিকদেরকেই বেশি দায়ী করা হয়। শ্রমিক সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর নিক্ষিপ্ত বোমায় একজন পুলিশ মারা যায়। এবং এ কারণেই পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে দাবী করা হয়। পুলিশের গুলিতে অনেক শ্রমিক হতাহত হলেও মেথিয়াস জে ডিগান নামের নিহত সেই পুলিশের স্মরণে ১৮৮৯ সালে হে মার্কেট স্কোয়ারে একটি মনুমেন্ট নির্মাণ করা হয়। সেদিন অর্ধশতাধিক পুলিশ আহত হয় এবং এ ঘটনাকে পুলিশের নথিতে দাঙ্গা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
ডিগানকে খুন করার জন্য যে বিচারের আয়োজন করা হয়, সেই বিচারে সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে বিশ্বব্যাপি শ্রমিক জনগণ মিছিল-সমাবেশের মাধ্যমে এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড রহিত করা হলেও বাকি চারজন স্পাইস, পারসন্স, ফিশার ও এঞ্জেল'কে ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ফাঁসির রজ্জু গলায় পরার সময় এই সাহসী বীরেরা আন্তর্জাতিক বিপ্লবী সঙ্গীত গাইতে থাকেন।
শিকাগোর ফরেস্ট পার্কে জার্মান ওয়াল্ডহেইম কবরস্থানে যেখানে তাঁদেরকে সমাহিত করা হয়, ১৮৯৩ সালে সেখানে তাঁদের স্মরণে একটি মনুমেন্ট নির্মাণ করা হয়। আর একশ’ বছর পরে এসে ভাস্কর আলবার্ট ওয়েইনার্ট নির্মিত এই মনুমেন্টকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হিস্টরিক ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ঘোষণা করে।
এখন তাহলে প্রশ্নটা থেকেই যায়, মে দিবসের কী হবে ?
(more picture)
[sachalayatan]
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment