Friday, May 1, 2009

# পুষ্প তোমার নাম কী। ০১। কদম্ব


পুষ্প তোমার নাম কী। ০১। কদম্ব
রণদীপম বসু

রাগ করেছি ঠিক করেছি
মুখ ফুলিয়ে সই,
তাই বলে তো কারো সাথেই
করছি না হৈ চৈ !

করছি না তো ঝগড়া-ফ্যাসাদ
করছি না দম্ভ,
জিদ তো হবেই- বলবে কেন
মুখটা কদম্ব !

কদম্ব পরিচিতি:


কদমকে বর্ষার দূত বলা হয়। ‘সখী, ঐ শুনো কদম্বতলে বংশী বাজায় কে’ (উত্তরবঙ্গের লোকগীতি)। বৈষ্ণব সাহিত্য থেকে লোকগাথা, পল্লীগীতি, রবীন্দ্র-কাব্য সহ গোটা বাংলা সাহিত্যে বহুল উপমায় প্রশস্তিতে ভরে আছে কদমের গুণগাথা।

বৈজ্ঞানিক নাম: অ্যানথোসেপেল্যস চায়নেনসিস (Anthocephalus chinensis), যার সঠিক বঙ্গানুবাদে অর্থ দাঁড়ায় মস্তকাকৃতি ফুল। ফ্যামিলি বা গোত্র: রুবিয়্যাসি (Rubiaceae)।

পুষ্প: একটি পূর্ণ মঞ্জরিকে সাধারণত একটি ফুল বলে মনে হয়। পূর্ণ মঞ্জরিটি দেখতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস থাকে। পূর্ণ প্রস্ফুটিত মঞ্জরির রং সাদা-হলুদে মেশানো। প্রতিটি ফুল খুবই ছোট, বৃতি সাদা, দল হলুদ, পরাগচক্র সাদা এবং বহির্মুখীন, গর্ভদণ্ড দীর্ঘ। বৃন্ত ১-২ ইঞ্চি দীর্ঘ। মঞ্জরি একক, গোল, দেড় থেকে দু’ইঞ্চি প্রশস্ত। মঞ্জরি দণ্ড এক থেকে দেড় ইঞ্চি।

ফল: গোল, হলুদ, মাংসল এবং দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি চওড়া। টক স্বাদ। বাদুড় ও কাঠবিড়ালীর প্রিয় খাদ্য, ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহন।


বৃক্ষ: কদম দীর্ঘাকৃতি, বহুশাখী, পত্রমোচী বৃক্ষ। কদমের কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। শাখা অজস্র এবং মাটির সমান্তরালে প্রসারিত। পাতা বড়, লম্বায় ৫ থেকে ৯ ইঞ্চি, চওড়া ৩ থেকে ৭ ইঞ্চি। ডিম্বাকৃতি কিংবা লম্ব-ডিম্বাকৃতি, চার্ম, উপরিভাগ তেল-চকচকে মসৃণ, বিন্যাসে বিপ্রতীপ, পৃষ্ঠ রোমশ, উজ্জ্বল সবুজ। উপপত্রিকা অত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী বিধায় পরিণত পাতা অনুপপত্রিক। বোঁটা খুবই ছোট। অল্পবয়স্ক গাছের পাতা বৃহত্তর।

সতর্কতা: নিষ্পাপ শিশুদের মুখকে কখনোই কদম্বের সাথে তুলনা করা চলবে না। তাহলে ঠিক ঠিকই মুখটাকে কদম্বের মতোই বানিয়ে ফেলতে পারে। যা সঠিকমাত্রায় পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা বহুত শ্রমসাধ্য হয়ে ওঠবে। হা হা হা !

তথ্যসূত্র: শ্যামলী নিসর্গ/ দ্বিজেন শর্মা/ প্রকাশক- বাংলা একাডেমী/ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সংস্করণ।
(০১/০৫/২০০৯)

[sachalayatan]

No comments: